সংবিধানের প্রস্তাবনা কি সংশোধন করা যায়? এটি একটি বিতর্কিত বিষয়, যা ৩৬৮ নং ধারার আওতায় বিভিন্নভাবে আলোচিত হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট বিভিন্ন মামলায় এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছে। এখানে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর এবং প্রাসঙ্গিক মামলাগুলোর বিচার বিশ্লেষণ উপস্থাপন করছি।

৩৬৮ নং ধারা অনুযায়ী প্রস্তাবনা সংশোধনের প্রশ্ন
প্রস্তাবনা সংবিধানের কার্যকরী অংশ নয় বলে অনেক সময় দাবি করা হয়। ১৯৬০ সালে বেরুবাড়ি মামলায় সুপ্রিমকোর্ট এমনটাই রায় দিয়েছিল। তবে, ১৯৭৩ সালের ঐতিহাসিক কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা রাজ্য মামলায় এই বিষয়ের পুনর্মূল্যায়ন হয়। মামলায় আবেদনকারী যুক্তি দেন যে, সংবিধানের ৩৬৮ নং ধারায় প্রদত্ত সংশোধনের ক্ষমতা সীমাহীন নয় এবং প্রস্তাবনায় উল্লিখিত মৌলিক উপাদান বা নীতিগুলো (basic features) ক্ষতিগ্রস্ত করা যায় না।
অ্যাটর্নি জেনারেল এই যুক্তির বিরোধিতা করেন এবং বলেন যে, প্রস্তাবনা সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুতরাং, ৩৬৮ নং ধারার মাধ্যমে এটি সংশোধন করা সম্ভব।
সুপ্রিমকোর্টের ঐতিহাসিক রায়
কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রিমকোর্টের রায়ে বলা হয়:
- প্রস্তাবনা সংবিধানের অংশ হলেও এটি সংশোধনযোগ্য।
- তবে, মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলি (basic features) সংশোধন করা যাবে না।
এই রায়ে সুপ্রিমকোর্ট মন্তব্য করে, "প্রস্তাবনায় উল্লিখিত মৌলিক উপাদানগুলির ওপর ভিত্তি করেই ভারতীয় সংবিধানের কাঠামো দাঁড়িয়ে আছে।"
৪২-তম সংবিধান সংশোধন এবং প্রস্তাবনায় পরিবর্তন
১৯৭৬ সালে ৪২-তম সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রস্তাবনায় 'সমাজতান্ত্রিক', 'ধর্মনিরপেক্ষ' এবং 'সংহতি' শব্দগুলো যোগ করা হয়।
- এই সংশোধন সংবিধানের মৌলিক আদর্শগুলিকে শক্তিশালী করেছে।
- যেমন, 'সমাজতন্ত্র' শব্দটি সংযোজন আদালতসমূহকে শিল্পের জাতীয়করণে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
এগুলো প্রমাণ করে, ৪২-তম সংশোধন সুপ্রিমকোর্টের রায়কে সমর্থন করেছিল।
উপসংহার
সংবিধানের প্রস্তাবনা সংশোধনযোগ্য হলেও এর মৌলিক বৈশিষ্ট্য অপরিবর্তনীয়। প্রস্তাবনায় সংযোজিত যে-কোনো পরিবর্তন অবশ্যই সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
আরও জানতে চান? আমাদের এই সাইট টি সেভ করুন!
 Reviewed by Wisdom Apps
        on 
        
ডিসেম্বর ০৩, ২০২৪
 
        Rating:
 
        Reviewed by Wisdom Apps
        on 
        
ডিসেম্বর ০৩, ২০২৪
 
        Rating: 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
কোন মন্তব্য নেই: