পণপ্রথা বিরোধী আইন- পন চাইলে কোথায় জানাবেন ? সাজা কি ? পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন বিস্তারিত

dowry law in bengali

পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন, ১৯৬১ (সংশােধনী, ১৯৮৬)

হিন্দু বিবাহে পণপ্রথা একটি দীর্ঘকালের কুপ্রথা। এই প্রথার ফলে বিশেষ করে মহিলারা স্বামীর গৃহে বিশেষভাবে নিগৃহীত হয়। এই কুপ্রথা নিষিদ্ধ করে ১৯৬১ সালে যে আইন তৈরী হয়, তাতে অনেক ফাঁক ছিল বলে সমাজের উপকার হয়নি। উল্টে পণের চাহিদা উৎকট আকারে বাড়তে থাকে, সেই সঙ্গে বঁধু নির্যাতন, আত্মহত্যা বা হত্যা নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। দফায় দফায় আইন সংশােধন করে, শেষে ১৯৮৬ সালে যে আকার নিয়েছে তার বিশেষ প্রয়ােজনীয় অংশগুলি দেওয়া হলো ।

'পণ' কাকে বলে?

বিয়ের উভয়পক্ষের একপক্ষ (বরপক্ষ / কনেপক্ষ) বা তার বাবা বা মা অথবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন জন যদি দিতে অন্য পক্ষ অথবা তার বাবা বা মা অথবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন জনকে বিয়ে করার শর্ত হিসাবে বিয়ে উপলক্ষে দ্বিত আগে বা পরে, অথবা অনুষ্ঠানের দিনে সােজাসুজি বা ঘুরপথে কোন সম্পত্তি অথবা মূল্যবান কোন জিনিস (যেমন নগদ টাকা, টিভি, রেফ্রিজারেটর, সােনা ইত্যাদি) দিতে বা দেওয়ার জন্য রাজি থাকেন তবে তাকেই ‘পণ' বলে।

কিন্তু যেসমস্ত ব্যক্তি মুসলিম ব্যক্তিগত আইন (শরিয়তী আইন) অনুযায়ী চলেন তাঁদের ক্ষেত্রে 'যৌতুক' বা 'মােহর। (দেন মােহরও বলা হয়) উপরে যে পণের কথা বলা হয়েছে তা এর আওতায় আসবে না।


'পণ' দেওয়া / নেওয়ার শাস্তি

( পণ যে দেয় ও যে নেয় উভয় পক্ষেরই শাস্তি হবে )

* পণ দেওয়া নেওয়া, বা লেনদেনে সাহায্য করার সাজা হবে কমপক্ষে পাঁচ বছর জেল এবং জরিমানা, কমপক্ষে পনের হাজার টাকা অথবা যৌতুকের মূল্য দুইয়ের মধ্যে যেটি বেশি।

কিন্তু কোন রকম জোর জবরদস্তি বা দাবি ছাড়া যদি বর / কনেকে উপহার দেওয়া হয়, তা কোন অপরাধ হবে না । তবে সব উপহারের লিখিত তালিকা রাখতে হবে।

" প্রচলিত রীতি বা আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী উপহার দিলে কোন শাস্তির প্রশ্ন উঠবে না (আইনের ফাঁক)।


'পণ দাবি করার শাস্তি -

সোজাসুজি বা ঘুরপথে পণের দাবি করলে সাজা হবে কমপক্ষে ছ' মাস থেকে দু' বছর জেল এবং দশ হাজার টাকা। পর্যন্ত জরিমানা। খবরের কাগজ বা অন্যপ্রচার মাধ্যমে যদি ছেলে/মেয়ে বা অন্য কোনও আত্মীয়ের বিয়ের জন্য টাকা বা ব্যবসায়ভা" বা ঐ ধরণের লােভ দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তবে ছাপাখানা, প্রচারক, প্রকাশকের সাজা হবে ছ' মাস থেকে পাই বছর জেল অথবা পনের হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা। )


'পণ' দেওয়া / নেওয়ার অভিযোেগ কার কাছে জানাতে হবে ?

(ক) কোনাে ছেলের বাড়ির লােকেরা যদি পণ দাবি করে তাহলে যার কাছে দাবি করা হয়েছে তিনি নিজে বা কোনাে এন.জি.ওর সাহায্যে থানায় এফআইআর করতে পারেন। আর যদি পুলিশ অভিযােগ না নেয় তবে তার এলাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযােগ জানাতে পারেন।

(খ) রাজ্য সরকার এই আইন প্রয়ােগের জন্য বিশেষ অফিসার নিয়ােগ করতে পারেন এবং প্রতিটি জেলার সমাজ কল্যাণ আধিকারিকের কাছে অভিযােগ জানানাে যেতে পারে।

(গ) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অথবা প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিজ অবগতির ভিত্তিতে অথবা পুলিশের রির্পোটের ভিত্তিতে অভিযােগের বিচার করতে পারবেন।

(ঘ) পাত্র/পাত্রী যার কাছ থেকে পণ চাওয়া হয়েছে অথবা তার বাবা বা মা । যে কোনাে আত্মীয়, অথবা যে কোনো স্বীকৃত অসরকারী সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান নালিশ জানাতে পারে ।

মামলা দায়ের করার নির্দিষ্ট কোন সময়সীমা নেই।

অভিযােগ প্রমাণিত হলে এই অপরাধ জামিন অযােগ্য। এক্ষেত্রে কোন আপস করা যাবে না৷ | যার বিরুদ্ধে অভিযােগ তাকে প্রথমেই দোষী বলে ধরা হবে ; নিজেকে নিরপরাধ বলে প্রমাণ করার দায় তার নিজের।


পণজনিত মৃত্যু

বিয়ের অল্প কিছুদিনের মধ্যে কোন ক্ষেত্রে (306IPC) ৩ মাস, কোন ক্ষেত্রে (304BIPC) ৬ মাস, কোন ক্ষেত্রে (306IPC, 304BIPC, 498A) ৭ বছরের মধ্যে বধূ আত্মহত্যা করলে অথবা তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে, সাক্ষ্যপ্রমাণের মধ্যে দিয়ে যদি প্রমাণিত হয় যে মৃতার স্বামী বা অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের দুর্ব্যবহার, শারীরিক অত্যাচার তাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিয়েছে, বা তার মৃত্যু ঘটানাে হয়েছে , তবে ধরে নেওয়া যায় যে এর পিছনে জোর করে পণ আদায়ের চক্রান্ত রয়েছে।


কার কাছে অভিযােগ জানাতে হবে -

অপরাধ যে এলাকায় ঘটেছে সেই এলাকার থানায় অভিযােগ জানাতে হবে। শুধু জেনারেল ডায়েরী (GD) করলে পুলিশ মামলা করতে বাধ্য থাকে না। এফআইআর, দাখিল করতে হবে যার ভিত্তিতে পুলিশ মামলা শুরু করতে বাধ্য। সেশনস্ কোর্টে । প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে এই মামলার বিচার হবে'।

শাস্তি : জামিন অযােগ্য অপরাধ। কমপক্ষে ৭ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ।

পণ দেওয়া নেওয়ার ব্যাপারে কোনাে চুক্তি স্বাক্ষরিত থাকলে তা বাতিল করা হবে।


পণের টাকা বা সামগ্রী স্ত্রীধন হিসাবে বন্ধু বা তাঁর উত্তরাধিকারীর প্রাপ্য।

(ক) এই পণ বিয়ের এক বছর আগে দেওয়া হলেও একই নিয়ম খাটবে।

(খ) বিয়ের সময় বা এক বছর পরে দেওয়া হলেও তাই।

(গ) নাবালিকা বধূর ১৮ বছর বয়স হলেই সে সব সামগ্রী তাঁকে দিয়ে দিতে হবে।



এই আইনের বিস্তারিত পাবেন সরকারী ওয়েবসাইটের pdf এই লিঙ্ক থেকে - ডাউনলোড করুন


পণপ্রথা বিরোধী আইন- পন চাইলে কোথায় জানাবেন ? সাজা কি ? পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন বিস্তারিত পণপ্রথা বিরোধী আইন- পন চাইলে কোথায় জানাবেন ? সাজা কি ? পণপ্রথা নিষিদ্ধকরণ আইন বিস্তারিত Reviewed by Wisdom Apps on অক্টোবর ৩০, ২০২২ Rating: 5

1 টি মন্তব্য:

  1. Playing or success in this game doesn't imply future success at ‘real money’ playing. Caesars Slots doesn't require fee to entry 바카라 카지노 and play, however it additionally lets you buy digital gadgets with real cash inside the game. You can disable in-app purchases in your device’s settings. You could require an web connection to play Caesars Slots and entry its social features. You can also find more details about the functionality, compatibility and interoperability of Caesars Slots within the above description.

    উত্তরমুছুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.