মিউচুয়াল ফান্ড কি?
ধরুন আপনি শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না, কারন মার্কেট বুঝে - ইনভেস্ট করা ও সঠিক সময় টাকা তুলে নেওয়ার মতো সময় আপনার নেই । তাহলে আপনি আপনার টাকা দিয়ে দিতে পারেন কিছু দক্ষ লোকের কাছে যারা আপনার হয়ে শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করবে এবং সামান্য কিছু কমিশন নিজেদের জন্য রেখে দিয়ে বাকি মুনাফা আপনাকেই দেবে । এই দক্ষ লোকেরদের বলে ফান্ড ম্যানেজার আর আপনি তাদের কাছ থেকে টাকার বদলে যেটা নিচ্ছেন সেটা সরাসরি শেয়ার নয় তাই তার নাম মিউচুয়াল ফান্ড ।
তাই বলা চলে -মিউচুয়াল ফান্ড হল একটি আর্থিক বাহন যা শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে স্টক, বন্ড, মানি মার্কেট ইনস্ট্রুমেন্ট এবং অন্যান্য সম্পদের মতো সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের জন্য সম্পদ সংগ্রহ করে। মিউচুয়াল ফান্ডগুলি পেশাদার মানি ম্যানেজারদের দ্বারা পরিচালিত হয়, যারা ফান্ডের সম্পদ বরাদ্দ করে এবং ফান্ডের বিনিয়োগকারীদের জন্য মূলধন লাভ বা আয় তৈরি করার চেষ্টা করে। একটি মিউচুয়াল ফান্ডের পোর্টফোলিও এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে তার প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত বিনিয়োগের উদ্দেশ্যগুলির সাথে মেলে ।
একটা মিউচুয়াল ফান্ডের উদাহরন দেওয়া যাক ঃ
TATA DIGITAL INDIA FUND ( টাটা ডিজিটাল ইন্ডিয়া ফান্ড ) কে উদাহরন হিসাবে নেওয়া যাক । এটি টাটা কোম্পানীর আন্ডারে থাকা একটা পপুলার মিউচুয়াল ফান্ড । এই ফান্ডে আপনি সামান্য 500 টাকাও যদি রাখেন সেই টাকাটা তারা ৩১ টা কোম্পানীতে নির্দিষ্ট ভাগে বিভক্ত করে বিনিয়োগ করবে । এই চার্টটা দেখুন , কোন কোম্পানীতে কি হারে টাকা বিনিয়োগ করা হবে তার চার্ট -
প্রধান ১০ টি কোম্পানীর চার্ট দেওয়া হলো , এছাড়া আরো ২১ টি কোম্পানীতে আপনার টাকা বিনিয়োগ করা হবে , দেশী ছাড়াও বিদেশী কোম্পানী যেমন ফেসবুকের শেয়ারেও টাকা রাখা হবে । এভাবে আপনার বিনিয়োগ করা টাকা যতটা পারা যায় রিস্ক ফ্রী করার চেষ্টা করে ।
বর্তমানে টাটা ডিজিটাল ইন্ডিয়া শেয়ারের ফান্ড ম্যানেজার হলেন মীতা শেঠি , ইনিি ঠিক করেন আপনার ইনভেস্ট করা টাকা কোন কোন কোম্পানীতে লাগানো হবে । এবার সেই কোম্পানীর শেয়ারের দাম বাড়লে আপনার পোর্টফোলিওর ভ্যালুও বাড়তে থাকবে ।এইভাবে প্রতেকটি মিউচুয়াল ফান্ডে টাকার ঢালার আগে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেই কোম্পানী কোন কোন কোম্পানীতে কি পরিমানে ইনভেস্ট করছে । ফান্ড ম্যানেজার কে ? ইত্যাদি ইত্যাদি
এক্সিট লোড কি ?
কোনো ফান্ডে টাকা রাখার পর একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত টাকাটা জমা রাখতে হয় , সেটা ২৪ ঘন্টা থেকে ৫ বছর হতে পারে । এই সময় সীমার আগে টাকা তুলে নিলে আপনাকে লাভের কিছু অংশ পেনাল্টি দিতে হয় একে বলে এক্সিট লোড । ফান্ডে ইনভেস্ট করার আগে দেখে নিতে হবে এক্সিট লোড কত ? অনেক কোম্পনীতেই কোনো এক্সিট লোড থাকে না ।
ডাইরেক্ট ও জেনারেল মিউচুয়াল ফান্ড কি ?
ধরুন টাটা মিউচ্যুয়াল ফান্ডে আপনি টাকা রাখবেন , এখন আপনি সরাসরি টাটার কাছে না গিয়ে কাউকে টাকাটা দিয়ে রেখে দিতে বললেন - এটা হলো জেনারেল ফান্ড , এতে মধ্যস্ততা কারী কোম্পানী কিছুটা কমিশন নেয় । আপনি যদি সরাসরি মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানীতে টাকা রাখেন তাহলে সেটা ডাইরেক্ট ফান্ড । এখন বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ড কোম্পানীই নিজস্ব অ্যাপ বানিয়ে নিয়েছে , আপনি চাইলে সরাসরি বিনিয়োগ করতে পারেন , নাহলে যে অ্যাপ থেকেই বিনিয়োগ করবেন , দেখে নেবেন সেখানে ফান্ডের পাশে ডাইরেক্ট লেখা আছে কিনা ।
ETF কি ?
এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ETF) হল এক ধরনের পুল করা বিনিয়োগ নিরাপত্তা যা অনেকটা মিউচুয়াল ফান্ডের মতো কাজ করে। সহজে বলে গেলে - একই ধরনের অনেকগুলি শেয়ার নিয়ে একটা দল বানিয়ে সেই দলে ইনভেস্ট করাই হলো ETF । সাধারণত, ইটিএফগুলি একটি নির্দিষ্ট সূচক, সেক্টর, কমোডিটি বা অন্যান্য সম্পদগুলিকে ট্র্যাক করবে, তবে মিউচুয়াল ফান্ডের বিপরীতে, একটি নিয়মিত স্টকের মতোই স্টক এক্সচেঞ্জে ইটিএফগুলি কেনা বা বিক্রি করা যেতে পারে। একটি ETF একটি পৃথক পণ্যের মূল্য থেকে সিকিউরিটিজের একটি বৃহৎ এবং বৈচিত্র্যময় সংগ্রহ পর্যন্ত যে কোনও কিছুকে ট্র্যাক করার জন্য গঠন করা যেতে পারে। ETFs এমনকি নির্দিষ্ট বিনিয়োগ কৌশল ট্র্যাক করার জন্য গঠন করা যেতে পারে।
যখন কোনো Asset management companies (AMCs) কোম্পানী মিউচুয়াল ফান্ডের একটি নতুন স্কিম শুরু করে এবং প্রথম বারের জন্য পাবলিকদের সাবস্ক্রিপসন করার সুযোগ দেয় সেটাকে বলে নিউ ফান্ড অফারিং বা NFO ।
কোন মন্তব্য নেই: