" আমি জানতাম ২৬/১১/২০০৮ তে ভারতে উগ্রপন্থী হামলা হবে , আমি সতর্ক করেছিলাম । কেউ শোনেনি " - বললেন T D R Harischandra Gowda -নামের একজন স্বশিক্ষিত জ্যোতিষী ।
T D R Harischandra Gowda - কর্ণাটকের একজন জ্যোতিষী ও ভবিষ্যৎবক্তা । নিজের ভবিষ্যৎবাণী করার ক্ষমতার উপর এনার অগাধ বিশ্বাস । এই বিশ্বাসের জেরেই কিছুদিন আগে কর্ণাটক হাইকোর্টে তিনি একটি Public Interest Litigation (PIL) দাখিল করেছিলেন । এই PIL-এ তিনি অভিযোগ করেছেন - ২৬/১১/২০০৮ সালে ভারতে যে উগ্রপন্থী হামলা হয়েছিল সেটা তিনি আগেই ধ্যানযোগে জানতে পেরেছিলেন । তার দিব্যদৃষ্টিতে দেখা এই ঘটনার কথা তিনি থানায় জানান । স্বাভাবিকভাবেই থানা এই অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে । এরপর ভদ্রলোক ২৬/১১/২০০০ তারিখে তৎকালীন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীভিলাসরাও দেশমুখকে একটি চিঠি লেখেন যেখানে তিনি বলেন - যদি শ্রী ভেঙ্কটরামনা স্বামীর মন্দিরে একটি বিশেষ পুজো সম্পন্ন করা হয় তাহলে ভারতে ভবিষ্যতে এই উগ্রপন্থী হামলা হবে না । মুখ্যমন্ত্রী এই চিঠির কোনো উত্তর দেননি ।
জ্যোতিষীর কথা অনুযায়ী - এরপর ২০০৫ সালে তিনি ব্যাপারটি নিশ্চিত ভাবে বলেন যে আগামী ২০০৮-এ এরকম ঘটনা ঘটবে । স্বাভাবিক ভাবে স্বপ্ন বা দিব্যদৃষ্টির উপর ভরসা করে কেউ দায়িত্ব নিতে চায়নি ।
তার অভিযোগ -এত কথা শোনার পরেও অথোরিটি সেই সময় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেন? সেই কারনে এখন সরকারের উচিৎ সেই সব অথরিটির উপর অনুসন্ধান চালানো ।
কর্ণাটক হাইকোর্ট বিষয়টি ভালো করে দেখার পর খুব দ্রূত সম্পূর্ণ PIL টি খারিজ করেছেন । বিচারপতির মতে - যদি ভবিষ্যৎবক্তার নিজের দিব্যদৃষ্টির উপর এত বিশ্বাস ছিল তবে কেন তিনি সেই সময় কোর্টে আপিল করেননি ? ঘটনা ঘটে যাওয়ার ১০ বছর পর তার এই আপিলের কোনো মানে হয় না ।
বিস্তারিত দেখতে গিয়ে কোর্ট জানতে পারে - উক্ত ভদ্রলোক এই ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ আগেও করেছেন । কিছুদিন আগে বিধানসভা ভোটের সময় এই ভদ্রলোক রাজ্যপালকে চিঠি লিখে জানান -তিনি নিজে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হতে চান , গভর্নর যেন তাকে শপথ বাক্য পাঠ করার জন্য দ্রূত আমন্ত্রন জানান । এই জাতীয় চিঠি তিনি প্রতিভা পাটিল ও নরেন্দ্র মোদিকেও লিখেছেন ।
হাইকোর্টের বিচারপতির মতে এই জ্যোতিষী কেবলমাত্র ফেমাস হওয়ার জন্য এইসব কাজ করছেন । এই কারনে তিনি জ্যোতিষীকে খুব কড়া ভাবে জানিয়েছেন - ভবিষ্যতে আর কোনোদিনও যেন তিনি এইধরনের PIL দাখিল না করেন । এবং কোর্টের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য বিচারপতি উক্ত জ্যোতিষীকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কেরালা বন্যা ত্রান ফান্ডে ৫০০০টাকা দান করতে বলেছেন ।
বিচারপতি বেশ মজার ছলে এও বলেছেন - যদি আপনি কেরালার বন্যার ব্যপারটা আগে থেকে দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পেতেন তাহলে অজস্র মানুষের জীবনের সাথে সাথে আপনার এই ৫০০০ টাকাটাও বেঁচে যেত ।
.
ভবিষ্যৎবাণী করার অপরাধে জ্যোতিষীকে ৫০০০টাকা জরিমানা করল হাইকোর্ট , কেন ?
Reviewed by Wisdom Apps
on
আগস্ট ২৫, ২০১৮
Rating:
কোন মন্তব্য নেই: